নতুন বছরে পাহাড়ের প্রথম সূর্যোদয় উপভোগ করতে প্রকৃতিপ্রেমী পর্যটকরা ভিড় করছেন ‘পাহাড় কন্যা’ খ্যাত বান্দরবানে। নতুন বছরের থার্টি ফার্স্ট নাইটে বান্দরবানের সৌন্দর্য উপভোগ করতে ইতোমধ্যে ভিড় জমেছে বান্দরবানে। পর্যটকদের পদভারে মুখরিত হয়ে উঠেছে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি বান্দরবানের পর্যটন স্পটগুলো। দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে পর্যটকরা ছুটে এসেছেন পাহাড়, ঝিরি-ঝরনা আর সবুজ-শ্যামল প্রকৃতির টানে। বান্দরবানের নয়নাভিরাম বিস্তৃত প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখে মুগ্ধ হচ্ছেন পর্যটকরা। শহরের হোটেল-মোটেল, গেস্ট হাউসগুলো বুকিং হয়েছে আরও আগেই।
পর্যটন-সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী ও হোটেল-মোটেল মালিক সমিতির তথ্যমতে, প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর মেঘলা, নীলাচল, নীলগিরি, চিম্বুক, শৈলপ্রপাতসহ অসংখ্য পর্যটন স্পটসহ সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে থাকা হাজারো পাহাড়ের নয়নাভিরাম দৃশ্য ও অনায়াসে ভেসে চলা মেঘের ভেলা বহুমাত্রায় সমৃদ্ধ করেছে ‘পাহাড়ি কন্যা’ বান্দরবানের সৌন্দর্যকে। প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্য ও ১১টি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর আদি বৈচিত্র্যময় জীবনযাত্রা ও সংস্কৃতির কারণে বান্দরবানে দিন দিন পর্যটকদের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। অপরূপ সৌন্দর্যর কারণে সারা বছরই দেশি-বিদেশি পর্যটকদের আনাগোনা লেগেই থাকে বান্দরবানে। সরকারি নানা ছুটির দিনগুলোতে প্রাকৃতিকভাবে গড়ে ওঠা পর্যটনকেন্দ্রগুলোতে পর্যটকদের উপচে পড়া ভিড় লক্ষ করা যায়। এবারের নতুন বছরের আগমনেও তার ব্যতিক্রম ঘটেনি।
নতুন বছরের আগমনে বছরের শেষের দিন থেকেই মেঘলা, নীলাচল, নীলগিরি, নীল দিগন্ত, শৈলপ্রপাত, চিম্বুক, প্রান্তিক লেক, ন্যাচারাল পার্ক, বগালেক, নাফাকুম, রিজুক ঝরনাসহ বিভিন্ন পর্যটন স্পটগুলোত প্রচুর পরিমাণ পর্যটকের উপস্থিতি লক্ষ করা গেছে। বিশেষ করে থার্টি ফার্স্ট নাইট পালন করতে অনেক পর্যটক ছুটে এসেছেন পাহাড়ে।
এ বিষয়ে বান্দরবানে বেড়াতে আসা পর্যটক শ্রাবণী আক্তার বলেন, ‘আমি আগেও একবার বান্দরবানের পর্যটনকেন্দ্র দেখতে এসেছিলাম। তখন ছিল বর্ষা আর এবার হচ্ছে শীত। এ ছাড়া আগের চেয়ে পর্যটনকেন্দ্রগুলোও অনেক আধুনিক ও সুন্দর হয়েছে। এখানে আসলেই প্রকৃতির সঙ্গে হারিয়ে যেতে ইচ্ছে করে। সত্যিই অনেক সুন্দর এখানকার পাহাড় ও পর্যটন স্পটগুলো।’ঢাকা থেকে বেড়াতে আসা আরেক পর্যটক শামসুল হক বলেন, ‘আমি পরিবার নিয়ে এখানে বেড়াতে এসেছি। প্রতিবছর নতুন বছর নিজের এলাকাতেই থাকি। এবার ভাবলাম একটু ভিন্নতা আনি। এ সুবাদেই বান্দরবানে আসা। আশা করছি এবার আনন্দে কাটবে।’
আরেক পর্যটক লুবনা জাহান জানান, বান্দরবানের মুগ্ধ করা প্রাকৃতিক সৌন্দর্য মনকে আকৃষ্ট করে। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ যে এত প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর একটি জেলা রয়েছে তা বান্দরবানে না আসলে কেউ বুঝতে পারবে না।’এদিকে, পর্যটকদের আগমনে খুশি পর্যটন ব্যবসার সঙ্গে জড়িত সংশ্লিষ্টরা।এ বিষয়ে হোটেল মোটেল মালিক মো. জসিম উদ্দিন বলেন, ‘প্রতিবছরই নতুন বছরের আগমনের কয়েকদিন আগে থেকেই হোটেল-মোটেলে সব রুম বুকিং হয়ে যায়। এবারও সব বুকিং হয়ে গেছে। এখানে যে সকল পর্যটক বেড়াতে আসেন তারা প্রাকৃতিক দৃশ্য দেখে মুগ্ধ হন।’
দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আগত পর্যটকদের ভ্রমণ নিরাপদ ও আনন্দদায়ক করতে সব ধরনের নিরাপত্তাব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানান ট্যুরিস্ট পুলিশ বান্দরবান জোনের উপপরিদর্শক (এসআই) মো. শাহীন মিয়া। তিনি বলেন, ‘নতুন বছর উপলক্ষে পর্যটকরা বান্দরবান আসতে শুরু করেছেন। পর্যটকদের নিরাপত্তায় জেলার পর্যটন স্পটগুলোতে বাড়তি সর্তকতা বৃদ্ধি করা হয়েছে।’ এবারে এখানে এসে পর্যটকরা সহজে এবং নিরাপদে বেড়াতে পারবেন বলেও জানান তিনি।
বাংলাস্কুপ/প্রতিনিধি/এনআইএন